মাদারিপুর প্রতিনিধিঃ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কুন্ডুবাড়ি মেলা প্রায় আড়াই শ বছরের পুরনো একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। দীপাবলি ও কালীপূজার সময় এখানে বিশাল মেলা বসত। কিন্তু এবার এই মেলা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন  ব্যক্তি মেলা বন্ধের দাবি জানালে উপজেলা প্রশাসন প্রথমে মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।

মেলায় অসামাজিক কার্যকলাপ, যানজট এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এমন অযুহাতে মেলা বন্ধের দাবি তুলে তারা। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি ও কালীপূজা অনুষ্টিত হবে ৩১ ই অক্টোবর। এই উৎসবকে ঘিরে কালকিনি উপজেলার ভূরঘাটা এলাকায় ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলার আয়োজন করা হয়। প্রায় ২৫০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি ৯টি কারণ উপস্থাপন করে মেলাটি বন্ধের দাবি জানান। পরে কালকিনি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন সভা করে গত বৃহস্পতিবার মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে মেলার ঐতিহ্য ও এর সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষের জীবিকার কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসন দুই দিনের জন্য মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। মেলার পক্ষে-বিপক্ষে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে জেলা প্রশাসক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মেলা আয়োজকরা এই সিদ্ধান্তে খুশি হলেও, মেলা বন্ধের দাবিদাররা এখনও সন্দিহান। তারা এখনও মেলা বন্ধের সিদ্ধান্তে অটুট।

মেলাটি আয়োজনের ইজারা পৌরসভা থেকে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে দেওয়া হলেও, পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনের জেরে ইজারা বাতিলের দাবি উঠে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মেলা বন্ধের জন্য ৯টি কারণ উল্লেখ করে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। প্রশাসনও তাদের এই আবেদনের প্রতি সাড়া দিয়ে মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।

মেলা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসক মেলার পক্ষে-বিপক্ষে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি আজিজুল হক মল্লিকও উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান যে, মেলার কিছু বিষয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে।

পরিশেষে, জেলা প্রশাসক দুই দিনের জন্য মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সোমবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হবে।

সিলেট ২৪ বাংলা/বিডিবি