Murder Case: মাকে হত্যা করে মাদ্রাসা ছাত্র ‘সাদ’ গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১২:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
হাত খরচের টাকার জন্য মাকে হত্যা করেছে মাদ্রাসা ছাত্র সাদ
বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়া, ১২ নভেম্বর: হাতখরচের টাকা নিয়ে মায়ের সাথে ঝগড়া এবং পরবর্তীতে তাকে হত্যা করে রেফ্রিজারেটরে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল সোমবার রাতে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া সদরের জয়পুরপাড়া এলাকা থেকে সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯) নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ স্বীকার করেছে যে, গত কয়েকদিন ধরে তার মায়ের সাথে হাতখরচের টাকা নিয়ে ঝগড়া চলছিল। রবিবার রাতে এই ঝগড়া এক পর্যায়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং রাগান্বিত হয়ে সে তার মাকে হত্যা করে। পরে মৃতদেহটি বাড়ির রেফ্রিজারেটরে লুকিয়ে রাখে। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সে কুড়াল দিয়ে আলমারি ভাঙচুর করে এবং ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে বলে ভান করে।

র‌্যাব-১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. এহতেশামুল হক খান জানান, “আমরা একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সাদকে গ্রেপ্তার করেছি। তার বাড়ি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সাদ তার অপরাধ স্বীকার করেছে।

স্থানীয়রা জানান, উম্মে সালমা (৫০) একজন গৃহবধূ ছিলেন। তার দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। সাদ ছিল তাদের ছোট ছেলে। পরিবারের সূত্রে জানা যায়, সাদ প্রায়শই তার মায়ের সাথে টাকা পয়সা নিয়ে ঝগড়া করত।

গত রোববার, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়া এলাকায় এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী উম্মে সালমাকে নিজের ছেলে সাদ হত্যা করে।

র‌্যাবের ব্রিফিং থেকে জানা যায়, সাদ তার মায়ের কাছে হাতখরচের টাকা চেয়েছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হত। রাগান্বিত হয়ে সাদ বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। বেলা ১১ টায় ক্লাসের বিরতির সময় বাসার কাছে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াতে বের হয়। হঠাৎ তার মনে এক ভয়াবহ পরিকল্পনা জাগে। সে তার মাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুপুর সাড়ে বারটা নাগাদ সে বাড়ি ফিরে তার মাকে রান্না করতে দেখে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সে পেছন থেকে তার মায়ের মুখ চেপে ধরে। এক তীব্র সংগ্রামের পর সে তার মায়ের শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

ঘটনাস্থলে পাওয়া চিহ্ন থেকে বোঝা যায়, হত্যাকাণ্ডের সময় তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছিল। হত্যার পর সে

ব্রিফিং থেকে পাওয়া তথ্য মতে, সাদ তার মাকে হত্যার পর তার দেহকে রেফ্রিজারেটরে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। হত্যাকাণ্ডের পর সে তার মায়ের দুই হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে দেয় এবং লাশটি বাসার ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয়। এরপর ঘটনাকে ডাকাতির চেষ্টা বলে চালানোর জন্য সে বাড়ির আলমারিতে কুড়াল দিয়ে কোপ মেরে কুড়ালটি সেখানেই রেখে দেয়। এরপর বাসার প্রধান ফটক ভালো করে তালা দিয়ে বাইরে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর সে আবার বাড়িতে ফিরে তার বাবা আজিজুর রহমানকে ফোন করে জানায় যে তার মা বাসায় নেই। বাবা ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এবং প্রতিবেশীরা এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে সাদও তাদের সাথে যোগ দেয়। কিন্তু আসলে সেই খোঁজাখুঁজি ছিল মাত্র একটি নাটক। একপর্যায়ে সাদ নিজেই রেফ্রিজারেটরের ঢাকনা খুলে তার মায়ের লাশ বের করে এবং এই ঘটনাকে ডাকাতির চেষ্টা বলে চালানোর চেষ্টা করে।

দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, উম্মে সালমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বড় ছেলে বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে তার ছোট ছেলে সাদকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে এবং থানায় হস্তান্তর করেছে। সাদকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পাঠানো হবে। যদি সে স্বীকারোক্তি না দেয়, তাহলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।

সিলেট ২৪ বাংলা/বিডিবি